হ্যাকিং এর ইতিহাস
হ্যাকিং কি?
হ্যাকিং একটি প্রক্রিয়া যেখানে কেউ কোন বৈধ অনুমতি ছাড়া কোন কম্পিউটার বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে। যারা এ হ্যাকিং করে তারা হচ্ছে হ্যাকার। এসব কথা তোমরা প্রায় সবাই জান। আমরা প্রায় সবাই জানি হ্যাকিং বলতে শুধু কোন ওয়েব সাইট হ্যাকিং আবার অনেকের ধারনা হ্যাকিং মানে শুধু কম্পিউটার বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক হ্যাক করা, আসলে কি তাই? না আসলে তা না। হ্যাকিং অনেক ধরনের হতে পারে। তোমার মোবাইল ফোন, ল্যান্ড ফোন, গাড়ি ট্র্যাকিং, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স ও ডিজিটাল যন্ত্র বৈধ অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে তা ও হ্যাকিং এর আওতায় পড়ে। হ্যাকাররা সাধারনত এসব ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রের ত্রুটি বের করে তা দিয়েই হ্যাক করে।
এবার আসি হ্যাকার কে বা কি?
হ্যাকারঃ যে ব্যাক্তি হ্যাকিং practice করে তাকেই হ্যাকার বলে। এরা যে সিস্টেম হ্যাকিং করবে ঐ সিস্টেমের গঠন, কার্য প্রনালী, কিভাবে কাজ করে সহ সকল তথ্য জানে। আগে তো কম্পিউটারের এত প্রচলন ছিলনা তখন হ্যাকার রা ফোন হ্যাকিং করত। ফোন হ্যকার দের বলা হত Phreaker এবং এ প্রক্রিয়া কে বলা হ্য Phreaking । এরা বিভিন্ন টেলিকমনিকেশন সিস্টেমকে হ্যাক করে নিজের প্রয়োজনে ব্যাবহার করত।
তিন প্রকারের হ্যকার রয়েছেঃ
বলে রাখি হ্যাকারদের চিহ্নিত করা হয় Hat বা টুপি দিয়ে।
White hat hacker
Grey hat hacker
Black hat hacker
White hat hacker: সবাই তো মনে করে হ্যাকিং খুবই খারাপ কাজ তাই না? না হ্যাকিং খুব খারাপ কাজ না। White hat hacker হ্যাকাররাই তার প্রমান করে যে হ্যাকিং খারাপ কাজ না। যেমন একজন white hat hacker একটি সিকিউরিটি সিস্টেমের ত্রুটি গুলো বের করে এবং ঐ সিকিউরিটি সিস্টেমের মালিকে ত্রুটি দ্রুত জানায়। এবার সিকিউরিটি সিস্টেমটি হতে পারে একটি কম্পিউটার, একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কে্ একটি ওয়েব সাইট, একটি সফটোয়ার ইত্যাদি।
Grey hat hacker: Grey hat hacker হচ্ছে দু মুখো সাপ। কেন বলছি এবার তা ব্যাখ্যা করি। এরা যখন একটি একটি সিকিউরিটি সিস্টেমের ত্রুটি গুলো বের করে তখন সে তার মন মত কাজ করবে। তার মন ঐ সময় কি চায় সে তাই করবে। সে ইচ্ছে করলে ঐ সিকিউরিটি সিস্টেমের মালিকে ত্রুটি জানাতে ও পারে অথবা ইনফরমেশন গুলো দেখতে পারে বা নষ্ট ও করতে পারে। আবার তা নিজের স্বার্থের জন্য ও ব্যবহার করতে পারে। বেশির ভাগ হ্যকার রাই এ ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে।
Black hat hacker: আর সবছেয়ে ভয়ংকর হ্যাকার হচ্ছে এ Black hat hacker । এরা কোন একটি সিকিউরিটি সিস্টেমের ত্রুটি গুলো বের করলে দ্রুত ঐ ত্রুটি কে নিজের স্বার্থে কাজে লাগায়। ঐ সিস্টেম নষ্ট করে। বিভিন্ন ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়। ভাবিষ্যতে নিজে আবার যেন ঢুকতে পারে সে পথ রাখে। সর্বোপরি ঐ সিস্টেমের অধিনে যে সকল সাব-সিস্টেম রয়েছে সে গুলোতেও ঢুকতে চেষ্টা করে।
হ্যকাররা অনেক বুদ্ধিমান এটা সর্বোজন স্বীকৃত বা সবাই জানে। অনেক ভালো ভালো হ্যাকার জীবনেও কোন খারাপ হ্যাকিং করে নি। কিন্তু তারা ফাঁদে পড়ে বা কারো উপর রাগ মিটানোর জন্য একটি হ্যাকিং করল। তখন তুমি তাকে উপরের কোন ক্যাটাগরিতে পেলবে? সেও Grey hat hacker কারন তার হ্যাকিং টা নির্ভর করছে তার ইচ্ছে বা চিন্তার উপর।
নিচে আরো কয়েক প্রকারের হ্যকারদের সংগে তোমাদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিঃ
Anarchists: Anarchists হচ্ছে ঐ সকল হ্যাকার যারা বিভিন্ন কম্পিউটার সিকিউরিট সিস্টেম বা অন্য কোন সিস্টেম কে ভাঙতে পছন্দ করে। এরা যেকোন টার্গেটের সুযোগ খুজে কাজ করে।
Crackers: অনেক সময় ক্ষতিকারক হ্যাকার দের ক্র্যাকার বলা হয়। খারাপ হ্যকাররাই ক্র্যাকার। এদের শক বা পেশাই হচ্ছে ভিবিন্ন পাসওয়ার্ড ভাঙ্গা এবং Trojan Horses তৈরি করা এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক সফটয়ার তৈরি করা। (তুমি কি এদের একজন? তাহলে তো তুমি ই হচ্ছ হ্যাকিং এর কিং) ক্ষতিকারক সফটওয়ারকে Warez বলে। এসব ক্ষতিকারক সফটওয়ারকে তারা নিজেদের কাজে ব্যবহার করে অথবা বিক্রি করে দেয় নিজের লাভের জন্য।
Script kiddies: এরা কোন প্রকৃত হ্যকার নয়। এদের হ্যাকিং সম্পর্কে কোন বাস্তব জ্ঞান নেই। এরা বিভিন্ন Warez ডাউনলোড করে বা কিনে নিয়ে তার পর ব্যবহার করে হ্যাকিং ।
যাই হোক আজকে আমি এই পোস্টে হ্যাকিং এর ইতিহাস সম্পর্কে যানাতে এসেছি, আপনি যদি ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তাহলে কখুন না কখুন হ্যাকিং এই শব্দটি অবশ্যই শুনেছেন। কিন্তু আপনি কি যানেন এই হ্যাকিং এর আসাল ইতিহাস বা এটা সর্ব প্রথম কবে এবং যে শুরু করে? যদি না যেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই এই পোস্ট একটু মনোযোগ সহকারে পড়ুন অনেক কিছু তথ্য পাবেন বলে আমি আশাকরি।কীভাবে হ্যাকিং হয় এবং কারা কীভাবে এ কাজে যুক্ত – তা এখনো সাইবার বিশেষজ্ঞদের কাছে পরিষ্কার নয়। যদিও সাতের দশকেই এর সঙ্গে পরিচয় ঘটেছে এবং এখনো নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কার হয়ে চলেছে। ১৯৬০ সালে ম্যাসচুজ বিশ্ববিদ্যালয়ে হ্যাকিং বিষয়ে আলোচনা হত বলে জানা গেছে। তখন অবশ্য কম্পিউটারের মাধ্যমে শর্টকাট পদ্ধতি ব্যাবহার করাকেই হ্যাকিং বলা হত। ১৯৬৩ সালের ২০ নভেম্বর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের গবেষনাপত্রে হ্যাকিং শব্দটির উল্লেখ পাওয়া যায়।
এরপর আটের দশক। ফোন হ্যাকারদের দাপট শুরু হল। প্রথমদিকের ফোন হ্যাকারদের (এদের বলে ফ্রেকারস) মধ্যে জন ড্রেপারের নাম উল্লেখযোগ্য। গ্রুপ হ্যাকিং ও শুরু হল এই সময়েই। তারা ইলেকট্রনিক বুলেটিন বোর্ড সিস্টেমস ব্যাবহার করত। হ্যাকিং নিয়ে প্রথম ম্যাগাজিন ‘২৬০০’ প্রকাশিত হল ১৯৮৪ সালে। কীভাবে হ্যাকার হওয়া যায়, সারা পৃথিবীতে বিশেষ কী কী হ্যাকিং-এর ঘটনা ঘটেছে, ইত্যাদি বিষয়ে এটি বিশেষ ম্যাগাজিন। ১৯৮৬ সাল। হ্যাকিং-এর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হলেন আমেরিকার রবার্ট মরিস। ৬ হাজার সরকারী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের যাবতীয় তথ্য সে হ্যাক করে নিয়েছিল। তিন বছরের জেল এবং ১০ হাজার পাউন্ড জরিমানা হল রবার্টের।
নয়ের দশকে হ্যাকারদের স্বর্গের সময় বলে ধরা হয়। ১৯৯৫ সালে প্রায় ২০ হাজার ক্রেডিট কার্ডের নম্বর চুরি করে নেওয়ার অপরাধে সিরিয়াল কম্পিউটার ক্রিমিনাল কেভিন মিউনিখের ৫ বছরের জেল হল। ২০০০ সালে Danial Of Service (DOS) নামে আর একটি নতুন ধরণের কম্পিউটার আক্রমণের ঘটনা ঘটল। এই বছরেই পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো আক্রমণটি ঘটল অতিপরিচিত ইয়াহু (Yahoo) এবং আমাজন (Amazon) সাইটের ওপর। এ বছরেই আর একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটল। ওই বছরের মে মাসে পৃথিবীর কয়েক কোটি মানুষের মেলবক্সে ছড়িয়ে পড়েছিল “I LOVE YOU” ভাইরাস।
অনেক খোঁজাখুঁজি করে আপনাদের জন্য এই পোস্ট টা লিখেছি। এই ধরণের লেখা আপনাদের কেমন লাগে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।
আপনি যদি একজন ইথিক্যাল হ্যাকার এবং সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট হতে চান তাহলে আমাদের "ইথিক্যাল হ্যাকিং লার্নিং মিশন ২০২২" এ যুক্ত হতে পারেন। রেজিস্ট্রেশন করতে বা বিস্তারিত জানতে ইনবক্স।

Comments
Post a Comment